
নিজস্ব প্রতিবেদক।
অপহরণ মামলা থেকে রক্ষা পেতে রাজবাড়ীর পাংশা মডেল থানার ওসি-এসআইসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলা করেছেন এক নারী। রোবরার (৬ এপ্রিল) রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেছে বলে জানা গেছে। মামলার বাদী ওই নারীর নাম রিমা আক্তার। তিনি পাংশা মডেল থানার একটি অপহরণ মামলার এজাহার ভুক্ত মামলার ৫ নং আসামি।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২২ মার্চ সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬টার সময় পাংশা পৌরসভার পারনারায়ণপুর গ্রামের ভাড়াটিয়া সৌদি প্রবাসী বাদশা মিয়ার কন্যা প্রাইভেট পড়ার কথা বলে স্কুলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেড় হয়। প্রাইভেট পড়ার সময় পার হয়ে গেলেও মেয়েটি বাসায় ফিরে আসে না। যথাসময়ে মেয়েটি বাসায় না ফেরায় আশপাশ এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি জানতে পারেন জিসান খান নামের একজন তার মেয়েকে ভুলভাল বুঝিয়ে প্রেমের ফেলে আরো কয়েকজনের সহায়তায় ওইদিন তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অপহৃতের মা মোছা: মিনি খাতুন (৩০) বাদী হয়ে নাম উল্লেখ করে ৫ জনের বিরুদ্ধে পাংশা মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলো পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের লক্ষণদিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে মজনুর ছেলে মো: জিসান খান (১৯), মৃত মতিয়ার খানের ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে মজনু (৪৫) ও শরিফুল ইসলাম (৩২), রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জোছনা খাতুন (৩৮) ও শরিফুল ইসলামের স্ত্রী রিমা আক্তার (২৮)। মামলাটি দায়েরের পর পুলিশ অপহরণ হওয়া তরুণীকে উদ্ধারে কাজ শুরু করে। মামলাটির দায়িত্ব দেয়া হয় এসআই হিমাদ্রীকে।
গত ২ এপ্রিল এসআই হিমাদ্রী ও সঙ্গীয় ফোর্স অপহৃত তরুণী ৫ নং আসামি রিমা আক্তারের হেফাজতে আছে জানতে পেরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ৬ এপ্রিল রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাংশা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, এসআই হিমাদ্রী ও উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামের এতেম শেখের ছেলে আরিফ হোসেনের নামে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে গত ২ এপ্রিল রাত ১১ টার দিকে পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দনিরে নির্দেশে এসআই হিমাদ্রী হাওলাদার ও সহযোগী আরফি হোসনে ওই গৃহবধুর বাড়িতে যান। এসময় এসআই হিমাদ্রী ও সহযোগী আরিফ হোসেন ওই গৃহবধুর বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে তার স্বামীকে খোঁজার অজুহাতে তল্লাশি চালান। এক পর্যায়ে গৃহবধুর স্বামীকে না পেয়ে তারা গৃহবধুকে জাপটে ধরে যৌনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন র্স্পশকাতর জায়গায় হাত দেন ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এরপর তারা ওই গৃহবধূকে টেনে হিঁচরে ঘর থেকে বের করার সময় তিনি ওয়ারন্টে দখেতে চান। এসময় তারা জানান ওসির নির্দেশে ওয়ারন্টে ছাড়াই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। পরে তাকে থানায় এনে শারীরকি, মানসিক ও দৈহিক নির্যাতন চালানো হয়।
মামলায় আরো অভিযোগ করা হয়, স্বামীসহ স্বজনরা ওই গৃহবধূকে ছাড়িয়ে আনার জন্য থানায় গেলে ওসি-এসআই ও সহযোগী আরিফ তাদের কাছে মোটা অংকরে টাকা দাবি করে। এক র্পযায়ে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে মুচলেকার মাধ্যমে গৃহবধূকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে তাদের দাবি করা মোটা অংকরে টাকা না দিলে গৃহবধুর স্বামীকে গ্রেফতার করে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হয়।
পাংশা মডেল থানার ওসি-এসআই সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা মামলা দায়েরের পর থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হতে থাকে। বিষয়টি পাংশা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি জানান, পাংশা পৌরসভা এলাকা থেকে এক তরুনীকে অপহরণ করা হয়েছে র্মমে তরুণীর মা পাংশা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামী ছিল এই মামলার বাদীর ভাস্তে। মামলাটির তদন্তকারী র্কমর্কতা ছিল এসআই হিমাদ্রী। তদন্তকালে আমরা জানতে পারি উক্ত মামলার বাদীর হেফাজতে তরুনীকে রেখেছে। এজন্য তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তরুনীকে আমরা উদ্ধার করি। তারপরইে আজ (৬ এপ্রিল) আমাদরে বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলার দুই নম্বর আসামী অপহরণ হওয়া তরুনীর মামা। মামলাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। বাদী নিজের স্বার্থে হয়তো কোন পক্ষের ইন্ধনে মামলাটি করেছে। আমি সকল সংবাদর্কমীকে মূল ঘটনা উল্লখে করে সংবাদ প্রকাশরে জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।