
হাঁটতেই পারছিলেন না, দৌঁড়ানো তো দূরের কথা। দু’পায়ের ওপর কোনরকমে ভর করে খেলে যাচ্ছিলেন তবুও, পা জোড়া পারছিলেন না নড়াতে। ৪১তম ওভারে তো একবার রান নিতে গিয়ে শুয়েই পড়লেন মাটিতে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের তখন ১৪৭*, অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৫৭ বলে ৫৫ রান। মিনিট তিনেক খেলা বন্ধ থাকলো, ড্রেসিংরুম ছেড়ে অ্যাডাম জাম্পাও বেরিয়ে এলেন। ম্যাক্সওয়েল আর খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন না, ততোক্ষণে সবাই নিশ্চিত। জাম্পাও মাঠে ঢুকবেন শুধু, ঠিক সেই সময়ে ম্যাক্সওয়েল জানালেন, “আমি খেলব”।
২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯১ রানেই ৭ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া ১৫০ অব্দিও যেতে পারবে কি না, তা নিয়েও ছিল সন্দেহ। একমাত্র পরীক্ষিত ব্যাটার তখন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, তাকে আউট করা গেলেই খেলা শেষ। প্যাট কামিন্স, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজলউডরা কিই বা করবেন, ওয়ার্নার-স্মিথরাই যেখানে ব্যর্থ! কিন্তু সেই গ্লেনকেই আর আউট করা গেল না! সেঞ্চুরি করার পর থেকেই পা নড়াতে পারেননি, দু’পায়ে কোনরকমে দাঁড়িয়েই খেলে গেছেন একের পর এক শট! বাউন্ডারি ছাড়া এক-দুই নেয়ার মতো অবস্থায় যে তিনি ছিলেন না!
ম্যাক্সওয়েল খেলেছেন, শেষ অব্দি লড়েছেন। প্রায় অসম্ভব একটা ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছেন জয়। রান তাড়া করার পথে খেলেছেন বিশ্বকাপ ইতিহাসেই সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, যেই ইনিংস চলমান বিশ্বকাপেরও সর্বোচ্চ। অবাক করা ব্যাপার হলো, ২০১* রান করে দলকে জেতানোয় ম্যাক্সওয়েলের অবদান যতটা, মাত্র ১২* রান করার পরও প্যাট কামিন্সের অবদান যদি ঠিক ততোটাই কেউ বলে, তাহলেও বোধহয় দ্বিমত পোষণের সুযোগ কম থাকবে। কামিন্স ১২* রান যে করেছেন ৬৮ বল খেলে, ১৯ বল হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৩ উইকেটে!